দেশে স্বাস্থ্যসেবায় যে অর্থ ব্যয় হয় তার প্রায় অর্ধেকই যাচ্ছে ওষুধে। গত কয়েক দশকে এ ব্যয় কমার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। বর্তমানে এ ব্যয়ের হার ৪৪ শতাংশ। অর্থাৎ স্বাস্থ্য খাতে খরচের ১০০ টাকার মধ্যে ৪৪ টাকাই ওষুধের পেছনে ব্যয় হচ্ছে। এ খরচের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় পর্যায়ে রয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে ওষুধের খরচে বৈশ্বিক গড় ব্যয় ১৫ শতাংশ। সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে না পারার কারণে দেশে এ ব্যয় বেশি। এতে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তির বাড়তি ব্যয় (আউট অব পকেট এক্সপেনডিচার) বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদরা।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্যপ্রযুক্তি ও ক্লিনিক্যাল গবেষণার বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আইকিউভিআইএর তথ্যমতে, স্বাস্থ্যসেবার ব্যয়ে ওষুধের খরচ সবচেয়ে কম যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে মোট স্বাস্থ্যসেবার খরচের মাত্র ৯ শতাংশ ওষুধে ব্যয় হয়। এর পরের অবস্থানে রয়েছে কানাডা। দেশটিতে এ হার ১০ শতাংশ। অন্য দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিলে ১৩ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় ১৪ শতাংশ, ফ্রান্সে ১৫ শতাংশ, ইতালি, জাপান ও জার্মানিতে ১৭ শতাংশ, স্পেনে ১৮ শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০ শতাংশ ওষুধের পেছনে খরচ হয়।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপালেও স্বাস্থ্য ব্যয়ে ওষুধের খরচ বাংলাদেশের তুলনায় কম। এ দেশগুলোর সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এবং গবেষণা থেকে জানা যায়, ভারতে ওষুধে ব্যয়ের হার ২৭ শতাংশ, নেপালে ২৬ শতাংশ ও পাকিস্তানে ৩০ শতাংশের কিছু বেশি।
তবে দেশে মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৪৪ শতাংশই ওষুধে খরচ হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট। গত জানুয়ারিতে ১৯৯৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্ট প্রকাশ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এ প্রতিষ্ঠানটি। সর্বশেষ ২০২০ সালের হিসাবে দেখা যায়, সরকারি, বেসরকারি ও উন্নয়ন সংস্থার বার্ষিক স্বাস্থ্য ব্যয়ে ৭৭ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। এর মধ্যে ওষুধে ব্যয় হয়েছে ৩৪ হাজার কোটি টাকার বেশি, যা মোট ব্যয়ের ৪৪ শতাংশ। এছাড়া ২৩ শতাংশ হাসপাতাল অবকাঠামো, বহির্বিভাগে চিকিৎসায় ব্যয় হচ্ছে ১৬ শতাংশ, পরীক্ষায় ৮ শতাংশ, জনস্বাস্থ্যমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে ৪ শতাংশ, প্রশাসনিক কার্যক্রমে ২ শতাংশ এবং অন্যান্য খাতে খরচ হয়েছে ২ শতাংশ।
আইকিউভিআইএ বলছে, বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই গত ১৩ বছরে স্বাস্থ্যসেবার ব্যয়ের হার বৃদ্ধির সঙ্গে তুলনামূলকভাবে স্বল্প হারে ওষুধে ব্যয় বেড়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ২০০৬ থেকে ২০১০, ২০১১ থেকে ২০১৫ এবং ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ২ শতাংশ হারে স্বাস্থ্যসেবার খরচ বেড়েছে। এক্ষেত্রে ওষুধের খরচ শুধু ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বেড়েছিল মাত্র ২ শতাংশ। ফ্রান্সে ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৩ শতাংশ, ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ২ শতাংশ এবং ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৩ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবায় খরচ বেড়েছে। যদিও এ সময়ে দেশটিতে ওষুধের খরচ বাড়েনি। দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৮ শতাংশ, ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৪ শতাংশ এবং ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৬ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবায় খরচ বেড়েছে। এর মধ্যে ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ১০ শতাংশ, ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ২ শতাংশ এবং ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৪ শতাংশ ওষুধের ব্যয় বেড়েছিল।
স্বাস্থ্য অধিকার0আন্দোলন জাতীয় কমিটির সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব বণিক বার্তাকে বলেন, ‘প্রথমত দেশে ওষুধের দাম একটু বেশি, দ্বিতীয়ত, ডাক্তাররা ওষুধও লেখেন বেশি। এতে ওষুধের অপপ্রয়োগ বেশি হচ্ছে। কারণ সঠিক নীতিমালা নেই, নেই তদারকি। আমরা তো অন্য গ্রহের মানুষ না, কেন এখানে খরচ বেশি হয়? দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করতে হবে। আমাদের যতটুকু সফলতা রয়েছে তা জনস্বাস্থ্যবিষয়ক কার্যক্রমেই। চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় নয়। চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার ব্যয়ের কথা যদি বলি, সঠিক তদারকির অভাবে হোক, সচেতনতার অভাবে হোক ব্যয় কমেনি। এর সঙ্গে রয়েছে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের দুর্বৃত্তায়ন, চিকিৎসকদের অনৈতিকতা। অতিমুনাফালোভীদের কারণে ওষুধের পেছনে রোগীদের বেশি খরচ করতে হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় ওষুধ ও রোগ নিরীক্ষণের কারণে খরচ বাড়ছে। ফার্মেসির ব্যক্তিরাও ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ দিচ্ছে। এতে রোগীরা চিকিৎসকের কাছেও যাচ্ছেন না।’
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট বলছে, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০২০ সালে দেশে চিকিৎসায় ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় (আউট অব পকেট এক্সপেনডিচার বা সরকারি খরচের বাইরে ব্যক্তি যে ব্যয় করে) বেড়েছে। চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রে ১০০ টাকায় ২০১৫ সালে ব্যক্তির খরচ ছিল ৬৭ টাকা। ২০২০ সালে তা দাঁড়ায় ৬৯ টাকায়। আর স্বাস্থ্য খাতে সরকারের ব্যয় ২০১৭ সালে যে ব্যয় ২৬ শতাংশ ছিল, তা ২০২০ সালে দাঁড়ায় ২৩ শতাংশে। স্বাস্থ্যবিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের শুরুতে স্বাস্থ্য খাতে সরকার, দাতা সংস্থা ও বেসরকারি ব্যয়বিষয়ক বিভিন্ন গবেষণা করে সংস্থাটি সরকারকে পরামর্শ দেয়।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ব্যক্তির বাড়তি ব্যয়ের মধ্যে ৬৫ শতাংশই ব্যয় হচ্ছে ওষুধে। হাসপাতালে চিকিৎসা পেতে খরচ হচ্ছে ১০ শতাংশ, বহির্বিভাগে (বেসরকারি চেম্বার) ব্যয় হচ্ছে ১৩ শতাংশ, রোগ নিরীক্ষায় ১২ শতাংশ এবং বাকি ব্যয় হচ্ছে পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতে।
বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য খাতে ওষুধে ব্যয়ের তারতম্যের কারণ রয়েছে বলে মনে করেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাস্থ্য কাঠামো আর অন্যান্য দেশ বিশেষ করে উন্নত দেশের স্বাস্থ্য কাঠামো এক নয়। ফলে ব্যয়ের ভিন্নতা প্রাসঙ্গিক। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা খরচের তারতম্য রয়েছে। কারো চিকিৎসার জন্য দুটি ওষুধ লাগে আবার কারো জন্য লাগে এক ডজনের বেশি ওষুধ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনা করলে হবে না। সেখানে স্বাস্থ্যবীমা রয়েছে। আমরা উন্নত দেশের স্বাস্থ্য অবকাঠামোর সঙ্গে শুধু ওষুধের খরচ তুলনা করলে ভুল করব। চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাসহ জনস্বাস্থ্যের বিভিন্ন কাঠামোয় উন্নত দেশে যা রয়েছে তা আমাদের দেশে নেই। বিষয়টি সামগ্রিক।’
স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ ও জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, দেশে চিকিৎসায় ব্যক্তির বাড়তি ব্যয় দিন দিন বাড়ছে। তবে সরকার ও দাতা সংস্থার ব্যয় বাড়ছে না। যার প্রভাব পড়ছে ব্যক্তিগত ব্যয়ের ওপর। সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা (ইউএইচসি) নিশ্চিত করতে হলে ব্যক্তিগত ব্যয় কোনোভাবেই ৩০ শতাংশের ওপরে নেয়া যাবে না। তবে বাংলাদেশে দিন দিন ব্যক্তিগত ব্যয় বাড়ছে। এ ব্যয় বৃদ্ধির অন্যতম কারণ অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ বিক্রি। ব্যক্তিগত ব্যয়ের ৬৫ শতাংশই যাচ্ছে ওষুধ কিনতে। উন্নত দেশের তুলনায় উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোয় চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিগত খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব দেশে সরকারের সম্পদ ও ব্যবস্থাপনার অভাবে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি সহজ হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিজ্ঞান না শেখা, ভারসাম্যহীন জীবনযাপন ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে দেশে ওষুধের ব্যবহার বেশি হচ্ছে। এর উল্টো চিত্র উন্নত দেশগুলোয়।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ও স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক সরকার বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আউট অব পকেটের সিংহভাগ ব্যয় ওষুধে। আমরা যদি ওষুধের খরচ কমাতে পারি তাহলে পকেট ব্যয় অর্ধেকে নেমে আসবে। কিন্তু এক দশক ধরে ওষুধের পেছনের ব্যয় বেড়েছে। এটা যদি নিয়ন্ত্রণ করা না হয় তাহলে আমাদের চিকিৎসা ব্যয় সামনে আরো বৃদ্ধি পাবে। এর বড় কারণ সম্প্রতি ওষুধের দাম বেড়েছে, পাশাপাশি আমরা ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিক ক্রয় করছি। এখন অসংক্রামক রোগ যেমন ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপসহ দীর্ঘমেয়াদি জটিল রোগ বাড়ছে। এসবের জন্য আবার দীর্ঘসময় ধরে ওষুধ গ্রহণ করতে হয়। স্বাভাবিকভাবে এটাকে আমরা যদি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি তাহলে খরচ আরো বাড়বে। ওষুধের ক্ষেত্রে মুক্তবাজার অর্থনীতির কথা বলা হয়। বাংলাদেশ এখনো সেই পর্যায়ে যায়নি। আমাদের ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ১৫-১৬টি কোম্পানি দেশের ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। এটা মনোপলি ব্যবসার মতো হয়ে গেছে। তারা সমঝোতা করে মূল্য নির্ধারণ করছে। এক্ষেত্রেও সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ দরকার।’
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সারা দেশে ২৯৫টি অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান তৈরি করছে প্রায় ৪৬ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামাল। এছাড়া দেশের ২৮৪টি ইউনানি ও ২০৫টি আয়ুর্বেদিক, ৭১টি হোমিওপ্যাথিক ও ৩১টি হার্বাল ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার ওষুধ উৎপাদন করছে। এর মধ্যে অ্যালোপ্যাথিকের ৩১ হাজার ওষুধ রয়েছে। এসব ওষুধ দুই লাখের বেশি মডেল ফার্মেসি, মডেল মেডিসিন শপ ও ফার্মেসির মাধ্যমে মানুষের হাতে পৌঁছায়।
সাধারণ কোনো রোগের উপসর্গ দেখা দিলে ওষুধের দোকান থেকে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) বা ব্যবস্থাপত্রহীন ওষুধ কেনার সুযোগ রয়েছে। এ ধরনের ৩৯টি ওষুধ কেনার সুযোগ থাকলেও দেশে প্রায় সব ধরনের ওষুধই চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই বিক্রির চর্চা রয়েছে। এতে অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ ব্যবহারে মানুষের আউট অব পকেট এক্সপেনডিচার বাড়ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গ্লোবাল হেলথ এক্সপেনডিচার ডাটাবেজ বলছে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে স্বাস্থ্যসেবায় অর্থায়নের সিংহভাগ মূলত রোগীর নিজের পকেট থেকে আসে। বিশ্বে রোগীর গড় বাড়তি খরচ ৩২ শতাংশ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে এ খরচ সবচেয়ে বেশি।
জানা যায়, খাদ্যাভ্যাস, ওষুধ সেবনের চর্চা ও অভ্যাসগত কারণে বিক্রীত ওষুধের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় অ্যাসিডিটির ওষুধ। যার পরিমাণ মোট বিক্রীত ওষুধের ১৩ শতাংশের বেশি। অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে এ হার ৬ শতাংশের বেশি। এর পরই দেশে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ডায়াবেটিসের ওষুধ। ইনজেকশনের আকারে ব্যবহৃত এ ওষুধের হিস্যা মোট বাজারের সাড়ে ৩ শতাংশ। অর্থাৎ দেশের মোট বিক্রীত ওষুধের প্রায় ২৩ শতাংশই দখল করে আছে অ্যাসিডিটি, অ্যান্টিবায়োটিক ও ডায়াবেটিস।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল বণিক বার্তাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য সম্পর্কে মানুষের সচেতনতার অভাব রয়েছে। আমরা ধরেই নিই আমাদের অসুখ হবে না, আর হলে ওষুধ খেতে হবে। সারা দেশের মানুষের একই প্রবণতা। এটা প্রতিষ্ঠিত করেছেন কতিপয় চিকিৎসক ও ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি। কারণ অনেক ছোট একটা কিছু নিয়ে এলেও চিকিৎসক কিছু একটা ওষুধ দিয়ে দেন। দেখা যায় ওষুধ ছাড়াও নিরাময় সম্ভব কিন্তু সেটি না করে চিকিৎসকরা ওষুধ লিখে দেন। এটা মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থারই সমস্যা। আমাদের শিক্ষাই দেয়া হয় মানুষ রোগ নিয়ে এলে নিরীক্ষা করার, ওষুধ দেয়ার কিংবা প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার করার। এ ধারা চলে এসেছে। শতকরা ৯০ শতাংশ মানুষই মনে করে কিছু হলেই ওষুধ খেতে হবে। যদি সকালে উঠে এক গ্লাস পানি খাই, যদি একটি ফল খাই তাহলে যে অনেক রোগ থেকে সুস্থ থাকা যাবে এ ধারণারই বাইরে তারা।’