দেশে চলতি বছর ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চসংখ্যক ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের কথা গতকাল জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ২৪৬ জন। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। এ নিয়ে বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত শনাক্তকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১৪৩ জনে। ২০২৩ সালে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃতের নিশ্চিতকৃত সংখ্যা ৮৮।
সে অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৫ দশমিক ৪৫ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পরিসংখ্যানে প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, এ বছর বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বেশি।
বিষয়টিকে চরম উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখছেন রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্যবিদরা। তাদের ভাষ্যমতে, রোগটির বাহক এডিস মশা এরই মধ্যে আচরণ বদলে ফেলেছে। এর সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গুর লক্ষণেও দেখা যাচ্ছে পরিবর্তন। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের তীব্র জ্বরে আক্রান্ত হতেও দেখা যাচ্ছে কম। যদিও এর শক সিনড্রোম এখন আরো প্রাণঘাতী রূপ নিয়েছে। শনাক্তের আগেই মৃত্যুর ঘটনাও শোনা যাচ্ছে অনেক। আবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও হিসাব প্রকাশ করছে শুধু হাসপাতালে ভর্তিভিত্তিক।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জনস্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল (ইসিডিসি) বলেছে, চলতি বছর সারা বিশ্বে প্রায় ২২ লাখ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজারের মৃত্যু হয়েছে। সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোয়। সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়া দেশগুলো হলো ব্রাজিল, বলিভিয়া, পেরু ও আর্জেন্টিনা। সর্বশেষ হিসাবে ব্রাজিলে চলতি বছর শনাক্তকৃত ১৫ লাখ ১৫ হাজার ৪৬০ রোগীর মধ্যে মারা গেছে ৩৮৭ জন। প্রতি হাজার রোগীর বিপরীতে মৃত্যুহার শূন্য দশমিক ২৫ জন। বলিভিয়ায় শনাক্তকৃত ১ লাখ ২৬ হাজার ১৮২ রোগীর মধ্যে ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এক্ষেত্রে মৃত্যুহার হাজারে দশমিক ৫৫ জন। পেরুতে ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৪৯ রোগীর মধ্যে ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতি হাজারে ১ দশমিক ৪৩ জন। আর্জেন্টিনায় ৯৯ হাজার ৪৫৬ জনে মারা গেছে ৫৯ জন। হাজারে মৃত্যুহার দশমিক ৫৯ জন।
চলতি বছর ইসিডিসির দেয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় চলতি বছর ৪৪ হাজার, ফিলিপাইনে ৪০ হাজার, শ্রীলংকায় ৩৭ হাজার, ভিয়েতনামে ৩২ হাজার ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া সিঙ্গাপুর, আফগানিস্তান, লাওস, কম্বোডিয়া, চীন, অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ভানুয়াতু, মালদ্বীপসহ অন্তত ১০০টি দেশে ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশেও চলতি বছর ডেঙ্গুর সংক্রমণ রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিসংখ্যানও বলছে, চলতি বছরের মতো এত রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর ঘটনা আগের বছরগুলোয় দেখা যায়নি। এতদিন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ কেন্দ্রীভূত ছিল রাজধানীতে। এখন রাজধানীর বাইরে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে।
এ বছর রোগীরা চিকিৎসার আওতায় দেরিতে আসছে বলে মৃত্যু বেশি হচ্ছে—এমন মন্তব্য করেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুশতাক হোসেন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘রোগীরা শেষ মুহূর্তে চিকিৎসার আওতায় আসছে। আর যে রোগী ও মৃত্যু সংখ্যা আমরা জানছি তা হাসপাতালভিত্তিক। এর বাইরে যেসব রোগী রয়েছে এবং মৃত্যু হচ্ছে তা হিসাবের বাইরে থাকছে। কৌশলগত পর্যবেক্ষণের ঘাটতি রয়েছে। ব্রাজিল, বলিভিয়া, পেরুতে ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। তারা কখনো কখনো ডব্লিউএইচও ঘোষিত রেড জোনের মধ্যে পড়েছিল। আমরাও সেদিকে যাচ্ছি। আগামীতে ডেঙ্গু আরো মারাত্মক হতে পারে। আমাদের দেশে ওইসব দেশের থেকে রোগী কম হলেও তাদের চেয়ে মৃত্যুহার বেশি। সারা দেশে ডেঙ্গু যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখা কঠিন হবে।’
ডেঙ্গুতে মৃত্যু শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য উল্লেখ করে এ রোগতত্ত্ববিদ বলেন, ‘দুঃখের বিষয় হলো প্রতিরোধযোগ্য একটি রোগে মৃত্যু হচ্ছে। ব্যবস্থাপনা বৈজ্ঞানিক হওয়া উচিত। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং ইউনিয়নের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত। ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা ভালো হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। নারী, শিশু, গর্ভবতী, বয়োবৃদ্ধদের মধ্যে ডেঙ্গু শনাক্ত হলে তাদের যদি হাসপাতালে ভর্তির মতো অবস্থা না-ও হয়, তবুও তাদের পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। মশা, রোগী ও যে কীটনাশক দিয়ে মশা মারা হচ্ছে, এসব বিষয় নিয়ে দেশে সার্ভিল্যান্স বা বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ জরুরি।’
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, ডেঙ্গু ভাইরাসে সংক্রমিত এডিস ইজিপ্টি ও এডিস এলবোপিকটাস মশার কামড়ে মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু রোগ ছড়ায়। ডেঙ্গু প্রায়ই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অসুস্থতার একটি প্রধান কারণ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটছে। আমেরিকা, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ এবং বিশ্বের অনেক দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে।
ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত রোগে প্রতি বছর ৪০ কোটি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। সংস্থাটির ভাষ্যমতে, পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মানুষ এখন ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশ্বব্যাপী গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও উপগ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ুতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। এসব অঞ্চলের বেশির ভাগই শহর ও উপশহর। যদিও অনেক সংক্রমণ উপসর্গবিহীন বা শুধু হালকা অসুস্থতা তৈরি করে। তবে প্রায়ই এ ভাইরাসে সৃষ্ট জ্বর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ডেঙ্গুর জন্য নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। প্রাথমিকভাবে শনাক্তকরণ ও উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা রোগীকে সুস্থ করে তোলে এবং মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়।
কীটতত্ত্ব, রোগতত্ত্ব ও জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, দেশে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নির্মূলে ও রোগী ব্যবস্থাপনায় জনস্বাস্থ্যের চিন্তাভাবনা উপেক্ষিত। শুরু থেকেই সমন্বিত উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ একে অপরের প্রতি দোষারোপ করছে। রোগ দেখে মশা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। অথচ এ কার্যক্রম সারা বছরের। যেসব রোগীর হিসাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দিচ্ছে, তা শুধু হাসপাতালে ভর্তিভিত্তিক। এর বাইরে যেসব রোগী বাড়িতে রয়েছেন এবং মারা যাচ্ছেন, তাদের হিসাব আসছে না। একই সঙ্গে বহু বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা হলেও সেসব রোগীর তথ্যও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে নেই। ফলে ডেঙ্গুর সরকারি হিসাব একপক্ষীয়। পৃথিবীতে মশা টিকে রয়েছে নানা প্রতিকূল পরিবেশে অভিযোজিত হয়ে। আগে এডিস মশা পরিষ্কার পানি ছাড়া ডিম পাড়ত না। কামড়াত শুধু সকালে ও সন্ধ্যায়। এখন এমনটি দেখা যাচ্ছে না। এডিস ইজিপ্টি ও এডিস এলবোপিকটাস মশার মধ্যে এলবোপিকটাস দূষিত ও নোংরা পানিতে জন্মাচ্ছে। রাত-দিন সব সময়ই কামড়াচ্ছে। শহরের বহু বাড়িতে দিনের বেলাও অন্ধকার থাকে। আলো যায় না। আবার রাতের বেলাও অন্ধকার থাকে না। এটা আলোর দূষণ। এর ফলে মশাও আচরণ বদলেছে। আবার কীটনাশকও কাজ করছে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাকে বড় আকারে নিতে হবে। যেকোনো মূল্যে রোগীর যেন মৃত্যু না হয়। এজন্য গবেষণা প্রয়োজন, যারা মারা যাচ্ছে তারা কেন মারা যাচ্ছে, তারা কি দ্রুত শনাক্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে পারেনি। ডেঙ্গু রোগ ব্যবস্থাপনা বৈজ্ঞানিক হতে হবে। রোগী যেন দ্রুত হাসপাতালে আসতে পারে, তার সুবিধা রাখতে হবে। প্রয়োজনীয় জরুরি চিকিৎসা যন্ত্রাংশ প্রস্তুত রাখতে হবে। রোগী থাকলেও শূন্য মৃত্যুহারে চিকিৎসা ব্যবস্থার সাফল্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার উৎকর্ষ প্রকাশ পায়।’
জানা যায়, বিশ্বে ১৭৮০ সালে প্রথম ডেঙ্গু দেখা দেয়। এরপর ১৯৫০ সালে এশিয়ার থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ছড়ায়। পরে ১৯৬৩ সালে ভারতের কলকাতা এবং ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশের ঢাকায় ডেঙ্গুর সংক্রমণ দেখা দেয়। সে সময় ডেঙ্গুকে ঢাকা ফিভার নামে অভিহিত করা হয়। মূলত ২০০০ সালে বাংলাদেশে সরকারিভাবে ডেঙ্গুকে রোগ হিসেবে দেখা হয়। সে বছরই সাড়ে পাঁচ হাজার ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। আর তাদের মধ্যে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়। দুই দশক ধরে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ, রোগী ব্যবস্থাপনা এবং এডিস মশা নির্মূলে কাজ করছে সরকার। তবে মশা নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা এবং রোগী ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কারণে রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। ২০২২ সালে ৬১ হাজার রোগীর মধ্যে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়। এ বছরই দেশে সর্বোচ্চসংখ্যক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়। গত ২২ বছরে দেশে আড়াই লাখের বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে মারা গেছে ৮৫০ রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান কীটতত্ত্ববিদ ও ডব্লিউএইচও বাংলাদেশের সাবেক জাতীয় কনসালট্যান্ট মো. খলিলুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এবার মানুষ মশার কামড়ের শিকার বেশি হচ্ছে। সারা দেশেই গত ১০ বছরের মধ্যে মশার ঘনত্ব বেড়েছে। এডিস মশা নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কার্যকরী কর্মকৌশল নেই। তাদের কীটতত্ত্ববিদ নেই। ভারত ও শ্রীলংকায় এডিস মশা নির্মূলে আদর্শ ব্যবস্থাপনা রয়েছে। আমাদের দেশে রোগ দেখে মশা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাপনা নেয়া হয়। এ কার্যক্রম সময় মেপে হয় না, সারা বছরের কাজ।’
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ সম্মেলনে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন জানিয়েছেন, ডেঙ্গু ভাইরাসের চার ধরনের (ডেন-১, ২, ৩ ও ৪) মধ্যে একাধিক ডেন সংক্রিয় রয়েছে। তারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ২০০ নমুনা সংগ্রহ করে তাতে ডেন-১ ও ৪-এ আক্রান্তের হার বেশি পেয়েছেন। একাধিক ডেনে আক্রান্ত রোগীরাই বেশি মারা যাচ্ছে।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বণিক বার্তাকে বলেন, সাধারণত এডিস মশা দিনের বেলায় কামড়ায়, পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে এমনটি জানা থাকলেও এখন ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। অপরিষ্কার ও নোংরা পানিতেও এডিসের লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। এ মশা রাত-দিন সব সময়ই কামড়াচ্ছে। রোগীদের মধ্যে যারা শক সিনড্রোমে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে মৃত্যুহার বেশি। যেসব উপসর্গ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে দেখা যেত তা এবার দেখা যাচ্ছে না। এখন আগের মতো ডেঙ্গু রোগীর শরীরে উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর দেখা যাচ্ছে না। শরীরের ব্যথা, কয়েকদিনের জ্বর থাকছে না। প্লাটিলেট কমে গেলেও বোঝা যাচ্ছে না। এখন সাধারণ জ্বর, সর্দি, কাশি, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা হচ্ছে। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। রক্তচাপ কমে যাচ্ছে, কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, রোগী অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে, যা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম নামে পরিচিত। এবার ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ শক সিনড্রোম।
সর্বোচ্চ চিকিৎসার জন্য সরকারের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুত উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমরা হাসপাতালে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দিচ্ছি। এর বাইরে রোগী ও রোগ ব্যবস্থাপনাও করা হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা চলছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ চলছে।’