সেরা তিন জেলা হাসপাতালই রাজশাহী বিভাগে

জেলা বা জেনারেল হাসপাতাল হচ্ছে সরকারের মাধ্যমিক পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। জেলার বাসিন্দাদের চিকিৎসার সর্বশেষ আশ্রয়স্থল এ হাসপাতাল। তবে এসব সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক পর্যায়ের হাসপাতাল হিসেবে সেবা প্রদানে পিছিয়ে রয়েছে। সিংহভাগ হাসপাতালে নেই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), বিশেষায়িত ও বড় অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বারবার এসব ‘সার্ভিস’ হাসপাতালগুলোর মান ও চিকিৎসার পরিধি বৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে। তবে সীমাবদ্ধতার মধ্যেও নিয়মিতভাবে হাসপাতালগুলোর র্যাংকিং করে আসছে সরকার। এমন জেলা পর্যায়ের সর্বশেষ তালিকায় সেরা পাঁচ হাসপাতালের প্রথম তিনটিই রাজশাহী বিভাগের।

তালিকার শীর্ষে রয়েছে নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারত সীমান্ত ঘেঁষা রাজশাহী বিভাগের জেলাটিতে পৌনে ২৮ লাখ মানুষের বসবাস। তাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকারের রয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। পিত্তথলির পাথর অপসারণ, জরায়ুতে অস্ত্রোপচার, সিজারিয়ানসহ বেশ কয়েক ধরনের অস্ত্রোপচারের সুবিধা রয়েছে জেনারেল হাসপাতালটিতে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, স্বাধীনতার আগে প্রতিষ্ঠিত ৫০ শয্যার হাসপাতালটি ১৯৯৭ সালে ১০০ শয্যা সদর হাসপাতালে উন্নীত হয়। তবে ১০০ শয্যার লোকবল পায় ২০১৩ সালে। এরপর ২০১৯ সালে ১৫০ শয্যা করা হয়। ২০২০ সালে অনুমোদন পেলেও ২০২১ সালে চালু হয় ২৫০ শয্যার সুবিধা। রোগী ভর্তির হার শতভাগের বেশি। বহির্বিভাগে দৈনিক হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসার জন্য আসছে। বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে ৩২ ধরনের ওষুধ। তবে এখনো ২৫০ শয্যার লোকবলের সুবিধা পায়নি প্রতিষ্ঠানটি। পদের বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন ৪০ শতাংশের কম।

সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার কথা বলছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘২৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার পর দূর-দূরান্ত থেকে সেবাপ্রত্যাশীরা পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসছে। ১০০ শয্যার জন্য যে জনবল প্রয়োজন তাও এখানে নেই। ২৫০ শয্যা হওয়ার পরও ওষুধসহ অন্যান্য সুবিধা বাড়েনি। এত সংকটের মধ্যেও পরিপূর্ণ সেবা দেয়ার চেষ্টা চলছে। ভর্তি রোগীদের ৮০ শতাংশের বেশি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। অন্যত্র পাঠাতে হচ্ছে না। চিকিৎসকের অভাবে বেশকিছু জটিল অস্ত্রোপচার দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে।’

সরজমিনে ঘুরে দেখা যায় হাসপাতালের সেবার সীমাবদ্ধতা। কথা হয় কার্ডিওলজি ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী হাজেরা খাতুনের পুত্রবধূর সঙ্গে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার তার শাশুড়ি হূদযন্ত্রের জটিলতায় পড়েন। খরচ কমের আশায় সরকারি হাসপাতালে এলেও বেশির ভাগ ওষুধ কিনে আনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। জেলার মহাদেবপুর থেকে শারীরিক জটিলতা নিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন জেমি খাতুন। মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। হাসপাতালের সরবারহকৃত ওষুধ ও খাবারের কোনোটিই পাননি।

দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, জেলা বা জেনারেল হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান নিয়ে নিয়মিত র্যাংকিং করে আসছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলো নিয়ে সর্বশেষ প্রকাশিত তালিকায় নওগাঁ ছাড়াও দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট ১৫০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক সদর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। আর চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল ও নেত্রকোনা ১০০ শয্যা আধুনিক জেলা হাসপাতাল।

স্বাস্থ্য সুবিধার পর্যাপ্ততা (ফ্যাসিলিটি স্কোরিং), অনসাইট মনিটরিংয়ে (অনলাইন পর্যবেক্ষণ), ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশনে (বস্তুগত যাচাই) ও পেশেন্ট স্যাটিসফেকশন (রোগী সন্তুষ্টি) নিয়ে নির্দিষ্ট নম্বরের স্কোরের ভিত্তিতে র্যাংকিং করা হয়। এক্ষেত্রে প্রধানত চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রাংশের পর্যাপ্ততা, বহির্বিভাগ, রোগী ভর্তিসহ হাসপাতালের সার্বিক সেবা ও সুবিধা বিবেচনা করা হয়। এক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে অনসাইট মনিটরিংয়ের কাজটি করেন জেলার সিভিল সার্জন। তাদের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ‘ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশন’ বা সরজমিন পরিদর্শন করা হয়। এক্ষেত্রে মূলত চিকিৎসা যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন সেবা যাচাই করা হয়। এরপর রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করা হয় তারা সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট কিনা। এক্ষেত্রে ফ্যাসিলিটি স্কোরে ৮০, অনসাইট মনিটরিংয়ে ২০, বস্তুগত যাচাইয়ে ১৫০ ও রোগী সন্তুষ্টিতে ৫০সহ মোট ৩০০ নম্বরের ভিত্তিতে সার্বিক ফলাফল প্রকাশ করার কথা। ২০২২ সালের সুবিধার পর্যাপ্ততা বা ফ্যাসিলিটি স্কোরিং ও অনসাইট মনিটরিংয়ের ভিত্তিতে জেলা পর্যায়ের হাসপাতালের তালিকা নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

শীর্ষ অবস্থানে থাকা নওগাঁ হাসপাতাল ১০০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছে ৮৬ দশমিক ২২। দ্বিতীয় জয়পুরহাট পেয়েছে ৮৬ দশমিক ১৪। ৮৫ দশমিক ৫৫ নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ। চতুর্থ বাগেরহাটের স্কোর ৮৫ দশমিক ৩৮। আর পঞ্চম অবস্থানে থাকা নেত্রকোনার হাসপাতাল পেয়েছে ৮৫ দশমিক শূন্য ৬ স্কোর।

২০২২ সালের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ১৫০ শয্যাবিশিষ্ট জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতাল সেরা হাসপাতাল নির্বাচিত হয়েছিল। নারী ও পুরুষ মেডিসিন, অর্থো ও সার্জারি, গাইনি, শিশু, কার্ডিওলজি, ডায়রিয়া, অবজারভেশন, করোনাসহ ১০টি ওয়ার্ডে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ১৯৯৭ সালে ১০০ শয্যার জেলা হাসপাতালটিতে বর্তমানে ১৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। তবে এখনো ১০০ শয্যার জনবল রয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্টের পদ খালি রয়েছে। পাঁচ শয্যার ডায়ালাইসিস, কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সংযোগ, অক্সিজেন জেনারেটরের ব্যবস্থা ও ১০ শয্যার আইসিইউ প্রক্রিয়াধীন। সুবিধা রয়েছে জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার শনাক্তের। নিয়মিত চোখের অস্ত্রোপচার, অর্থোপেডিক, গাইনিসহ বেশ কয়েক ধরনের অস্ত্রোপচার হয়।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শহীদ হোসেন জানিয়েছেন, জেলা পর্যায়ে ভালো সেবা প্রদানের জন্য গত বছর দেশের সেরা জেলা হাসপাতাল এটি। সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। ১৫০ শয্যার হাসপাতালে গড়ে ৩০০ রোগী ভর্তি থাকছে। আর বহির্বিভাগে দৈনিক আসছে হাজারের বেশি রোগী।

অবকাঠামোগত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সেবার পরিধি ও মান বেড়েছে বলে দাবি তৃতীয় অবস্থানে থাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তারা বলছে, এখানে বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য আসা রোগীর দৈনিক সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। অর্থোপেডিক, চক্ষু, নাক, কান, গলাসহ বড় ধরনের অস্ত্রোপচার হচ্ছে নিয়মিত। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. মাসুদ পারভেজ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘১০ শয্যার আইসিইউ ও ডায়ালাইসিস ইউনিটের অবকাঠামো তৈরি হলেও জনবল ও যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়নি।’

লোকবল ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতির মধ্যেই স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে বলে দাবি করেন তালিকার চতুর্থ অবস্থানে থাকা বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, এখানে সি সেকশন, অ্যাপেন্ডিক্স, হার্নিয়া, পিত্তথলিতে পাথর অপসারণ, টিউমার অপসারণের অস্ত্রোপচার করা হয়। স্তন ক্যান্সারেরও প্রাথমিক চিকিৎসা আমরা দিতে পারি। এখানে ক্যান্সার, চক্ষু, কিডনি ও হূদরোগ কনসালট্যান্ট নেই। ফলে রোগীদের বিশেষ সেবা দেয়া কঠিন। এখানে ১০ শয্যার আইসিইউ ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সংযোগ রয়েছে। চিকিৎসকসহ অন্যান্য লোকবলের চরম সংকট রয়েছে।’

২৫০ শয্যার হাসপাতাল ঘোষণা করা হলেও আগের ১০০ শয্যায় স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার কার্যক্রম চলছে পঞ্চম অবস্থানে থাকা নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে। ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সেবাপ্রত্যাশীরা। চিকিৎসকের অনুপস্থিতি, রোগী হয়রানি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগও রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত মাসে সাড়ে তিন হাজার রোগী ভর্তি ও বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে প্রায় ১৫ হাজার। বহির্বিভাগে বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হয় ৩৫ ধরনের। চাহিদার ৫০ শতাংশের মতো চিকিৎসক নেই। নেই পর্যাপ্তসংখ্যক নার্স ও অন্যান্য লোকবল। রোগীদের শতভাগ সেবা দেয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন সংশ্লিষ্টরা বলে দাবি তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু সাঈদ মো. মাহবুবুর রহমানের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখা থেকে হাসপাতালের স্কোরিং করা হয় বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল বা সিভিল সার্জন যে তথ্য অনলাইনে দিচ্ছেন তা সরজমিনে যাচাই করা হয়। সে সময় আরো কিছু বিষয় তখন যুক্ত করা হয়। এগিয়ে থাকা ওইসব প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাতীয় পুরস্কার’ দেয়া হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) শর্ত ও নির্দেশনা মেনে এ স্কোরের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হয় বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘নির্দিষ্ট কিছু শর্ত সামনে রেখে নম্বর দেয়া হয়। নিয়মিত এ কাজ করা হয়। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী হাসপাতালগুলোকে সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের চেষ্টা করতে হয়।’

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, র্যাংকিংয়ের ধারণাটি ভালো। তবে এগুলোর মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। জেলা হাসপাতালের কী সেবা দেয়া উচিত তার নির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই। দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের হাসপাতালগুলোই কেবল সার্ভিস হাসপাতাল। সেবার মান ও পরিধি ঠিক করা নেই। সঠিক সেবা পাওয়ার জন্য মানুষের হয়রানির শিকার হতে হয়। কোনো হাসপাতালই দেয় না পূর্ণাঙ্গ সেবা। মানুষকে কোনো না কোনো কারণে জেলা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে জেলা পর্যায়েরই বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকের ওপর নির্ভর করতে হয়। রোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রস্তুতি থাকতে হবে। জেলায় সাধারণত ৩০ লাখের মতো মানুষ থাকে। এর মধ্যে কোন ধরনের রোগ কোন সময়ে বেশি হয় তা দেখতে হবে। এতে কত ওষুধ লাগতে পারে। জরুরি চিকিৎসার প্রস্তুতি থাকতে হবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিনামূল্যে ওষুধ প্রদানের কথা বলা হয়। আসলে কি পূর্ণাঙ্গ কোর্সের ওষুধ দেয়া হয়? কারো ১০ দিনের ওষুধ লাগলে তাদের দেয়া হয় তিনদিনের। আমরা আসলেই কি সব রোগীর চাহিদা পূরণ করতে পারছি? সংক্রমণ এড়াতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। বেশির ভাগ হাসপাতালে চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো পদ্ধতি, সুবিধা নেই। সরকারি হাসপাতালের সেবায় খুব কম মানুষ সন্তুষ্ট হয়। কারণ হাসপাতালের অভ্যর্থনা থেকে শুরু করে রোগীকে তথ্যের সহযোগিতা, চাহিদা অনুযায়ী রোগ পরীক্ষা ও অন্যান্য সুবিধা দিতে হবে। একটা অস্ত্রোপচার হলে ওষুধ রোগীকে বাইরে থেকে কিনতে হয়।’

তার মতে, রোগীর সঙ্গে চিকিৎসকের ব্যবহার নিয়ে প্রশিক্ষণও হয় না। একজন ডাক্তার যদি ২-৩ ঘণ্টায় ১০০ রোগী দেখেন তাহলে ভালোভাবে কথা বলা হয় না। সেক্ষেত্রে বহির্বিভাগে চিকিৎসক বাড়াতে হবে। বহির্বিভাগে সময়, জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বাড়াতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলা পর্যায়ে সরকারের ৬২টি হাসপাতাল রয়েছে। এর মধ্যে নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে দুটি করে চারটি হাসপাতাল রয়েছে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুরে কোনো জেলা হাসপাতাল নেই। দেশের সব ধরনের সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে (প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও টারশিয়ারি) শয্যা সংখ্যা ১ লাখ ৬৭ হাজারের কিছু বেশি। প্রতি ১০ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে সরকারি হাসপাতালে শয্যা রয়েছে ৩ দশমিক ৯৬টি আর বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছে ৫ দশমিক ৬১টি।

(প্রতিবেদনটি তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন নওগাঁ, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বাগেরহাট ও নেত্রকোনা প্রতিনিধি)

Source: Bonik Barta

Share the Post: